যান্ত্রিক কোলাহল ছেড়ে আমরা যারা প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে চাই একটু নিবিড় করে, তাদের জন্য প্রকৃতির বিস্ময় আর আতিথেয়তায় ভরপুর এক স্থান “সুইস ভ্যালি রিসোর্ট “। সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার এর শমশেরনগরে অত্যন্ত মনোরম এবং সুনিরাপদ পরিবেশে এর অবস্থান। শমশেরনগর রেলস্টেশন থেকে সুইস ভ্যালী রিসোর্ট মাত্র ২ কিঃমিঃ দূরে বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি রয়েছে শমশেরনগরে আর এর কোল ঘেঁষেই আপনাকে স্বাগত জানাবে সুইস ভ্যালি পরিবার। শমশেরনগর এয়ারপোর্ট রোডে অবস্থিত এই রিসোর্টে যাতায়াত ব্যবস্থা খুব সহজ। সরাসরি ট্রেনে যেতে পারেন অথবা বাসে। স্টেশন থেকে মাত্র মিনিট দশেক এর দূরত্ব। আর বাসে শ্রীমঙ্গল থেকে মাত্র আধাঘন্টার পথ। যেকোন রিসোর্ট কিংবা বিনোদন কেন্দের সার্ভিসিং সিস্টেমটাই মূল বিষয়।
সুইস ভ্যালি রিসোর্টে রয়েছে ভীষন আন্তরিক এবং দক্ষ একদল কর্মী যাদের শত ব্যস্ততার মাঝেও মুখের হাসিটি হারিয়ে যায়নি। সমগ্র রিসোর্টটির দায়িত্বে আছেন রাকিব নামের অসীম উদ্যোমী এর সুশিক্ষিত তরুণ, যার সুনিপুণ চিন্তাশক্তি, আন্তরিক ব্যবহারে আর সার্বক্ষণিক সহযোগীতায় আপনি মুগ্ধ হতে বাধ্য। তাঁদের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বলেই হয়তো ভুলেও আপনাকে মনে করতে দিবেন না যে আপনি ঘর ছেড়ে বাইরে আছেন। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়ে থাকেন দিন রাত ২৪ ঘন্টা এই সদাহাস্যজ্জোল তরুণ ও তার কর্মীবাহিনী। গাছের ডাল আর কাঠের তৈরি অসাধারন ডিজাইনের আসবাব আর সাজসজ্জা এর স্বকীয়তা প্রমাণ দিয়ে যায় বারবার। রিসোর্টে বেশ কিছু পাকা, আধ পাকা এবং কাঠের কটেজ আছে যা আধুনিক সুযোগ সুবিধায় স্বয়ংসম্পূর্ণ।প্রতিটি কটেজেই আছে কেবল কানেকশনসহ টিভির ব্যবস্থা আর অত্যাধুনিক ফিটিংস সমৃদ্ধ ঝা তকতকে বাথরুম। মনোরম কটেজ গুলোতে রাত কাটাতে ২৫০০ টাকা করে খরচ পড়বে। এছাড়াও বাইরে ক্যাম্পিং করে থাকার জন্য তাবুর ব্যবস্থাও আছে। একসাথে প্রায় ত্রিশজনের মতো লোকের আবাসন ব্যবস্থা করে থাকে কর্তৃপক্ষ।
এবার আসা যাক খাওরদাওয়ার বিষয়ে। সুইস ভ্যালি রিসোর্টের আরেকটি বড় বিষয় হলো, আপনি নিজের পছন্দমতো খাবার অর্ডার করতে পারবেন। তাদের দক্ষ শেফ তা হাজির কররে মুহুর্তেই। সমগ্র ডাইনিং রুম আর বাসনপত্রে রয়েছে নান্দনিকতা। ৩০০ টাকায় নানা পদের মুখরোচক খাবারে ভরপুর দারুন সাশ্রয়ী সেট মেনুর পাশাপাশি রয়েছে হাস, গরু, দেশি ও ব্রয়লার মুরগির মাংসের ব্যবস্থা, আছে স্পেশাল বার-বি-কিউ। সেই সাথে খিচুড়ি আর তাদের নিজ বাগানে চাষকৃত সবজিতো আছেই। সকালের নাস্তা পাবেন কমপ্লিমেন্টারি হিসেবে যেখানেও রয়েছে কাস্টমাইজেশন সুবিধা। রিসোর্টের মাঝেই রয়েছে বেশ কিছু ট্রি হাউজ, ছেলে বুড়ো সবার জন্য বিভিন্ন দোলনা, স্লিপার, মিনি জু, বাগান,ছাউনি দেয়া শীতল পাটি বিছানো শুয়ে বসে থাকার মনোমুগ্ধকর ব্যবস্থা। এর চারপাশ ঘিরে তৈরি করা হচ্ছে আঁকাবাঁকা লেক আর অত্যাধুনিক ব্যবস্থার সুইমিংপুল। লেকে মাছ ধরার এবং নৌ ভ্রমণের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানালের কর্তৃপক্ষ।
এখানকার লোকজনের আন্তরিকতা এতোই চমৎকার যে ফিরে আসার সময় আবেগ তাড়িত হতে আপনি বাধ্য। শমশেরনগর এবং আশেপাশের কুলাউড়া, মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গলে রয়েছে ঘুরে বেড়ানোর অনেক সুন্দর যায়গা যেসকল বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা পাবেন সুইস ভ্যালি রিসোর্টের পক্ষ থেকে। যারা এমনই কিছু খুঁজছিলেন কিংবা যাবো যাবো করেও বের হতে পারছিলেন না, আজই ঘুরে আসতে পারেন সুইস ভ্যালি রিসোর্ট থেকে আর স্নাত হতে পারেন অকৃত্রিম ভালোবাসা আর প্রকৃতির চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যে।